আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া জমিরিয়া কাসেমুল উলুম পটিয়া মাদ্রাসা

আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া জমিরিয়া কাসেমুল উলুম পটিয়া মাদ্রাসা, বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি কেবল একটি মাদ্রাসা নয়, বরং একটি বিপ্লব, একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, একটি স্বর্ণালি অধ্যায়। এ দেশ, এদেশের মাটি ও মানুষের ওপর যে কোনো প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এই মাদ্রাসা অবদান অনেক বেশি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণায় পটিয়া মাদ্রাসার সহযোগিতা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।

Al Jamia Al Islamia Patiya Madrasha | আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসা


Al Jamia Al Islamia Patiya Madrasha | আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসা

আল-জামেয়া প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট পটিয়া এলাকাকে পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতি এবং তথাকথিত প্রগতির ভয়াবহ সয়লাবের পাশাপাশি নাস্তিকতা, ধর্মদ্রোহিতা ও ধর্মহীনতার প্রবল ঘূর্ণিঝড় গ্রাস করে নিয়েছিল। অন্যদিকে ধর্মের নামে অধর্ম, সংস্কারের নামে কুসংস্কার এবং সভ্যতার নামে বর্বরতা প্রবলভাবে বিস্তারলাভ করেছিল। এমনকি পটিয়া শহরটি অদ্যাবধি চতুর্দিক থেকে পথভ্রষ্টতার বিভীষিকাময় বিষাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বহুকাল আগে থেকে। এই ঘোর অমানিশার মাঝে পটিয়ার গগনে উদিত হলো সৌভাগ্যের কাঙ্ক্ষিত তারকা। হযরত মুফতি আযিযুল হক (রহ.) আরও কিছু সমমনা ওলামায়ে কেরাম নিয়ে ১৯৩৮ সালে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ-পূর্বে ২৫ কিলোমিটার দূরে পটিয়া সদরে বিশ্ববিশ্রুত আযহারুল হিন্দ ‘দারুল উলুম দেওবন্দের’ অনুকরণে প্রতিষ্ঠা করেন জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসা। জামিয়া তার ঊষালগ্ন থেকেই অনেকের চক্ষুশূলে পরিণত হয়, যার কারণে বিভিন্ন সময় তারা মাদ্রাসার ওপর হামলা করে এবং কয়েকবার মাদ্রাসা জ্বালিয়ে দেয়ার অপপ্রয়াস চালায়।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ঐতিহ্যবাহী এই মাদ্রাসা বহুমুখী ধর্মীয় কার্যক্রম ছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতার একনিষ্ঠতা, অন্যান্য পরিচালকদের কর্মতত্পরতা আর প্রখ্যাত ইসলামী বুদ্ধিজীবী ও শীর্ষস্থানীয় ওলামাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে মাদরাসাটি আজকের এই আন্তর্জাতিক অবস্থানে এসে পৌঁছেছে।
বর্তমানে উক্ত মাদ্রাসার প্রধান পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন শায়খুল ইসলাম, শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বুখারী (দা.বা.)। আগে যারা জামেয়া পটিয়া মাদ্রাসাকে আপন সন্তানের মতো চিন্তা, চেষ্টা, নিষ্ঠা, প্রজ্ঞা, মনোবল ও তাকওয়া দ্বারা তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন তারা হচ্ছেন যথাক্রমে মুফতি আযিযুল হক (রহ.), হাজী ইউনুছ (রহ.), শায়খ হারুন ইসলামাবাদী ও আল্লামা নুরুল ইসলাম কস্ফদীম (রহ.)।
বর্তমানে মাদরাসার বিভিন্ন বিভাগে প্রায় পাঁচ হাজার ছাত্র লেখাপড়া করছে। ছাত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নও-মুসলিমও রয়েছে। জামিয়ার মুখপাত্র মাসিক আত-তাওহিদের সহকারী সম্পাদক আল্লামা ওবাইদুল্লাহ হামযা জানান, জামেয়ার সব ছাত্রকে বিনা বেতনে শিক্ষাদান, বাসস্থান, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ করা হয়। তার ওপর সবার যাবতীয় পাঠ্যপুস্তক জামিয়া থেকে বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। তিন হাজার জনের মতো ছাত্রকে জামেয়া থেকে বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। নও-মুসলিমসহ বিরাটসংখ্যক ছাত্রের পোশাক ও চিকিত্সা তথা সব ধরনের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব এই মাদ্রাসা বহন করে।

Al Jamia Al Islamia Patiya Madrasha | আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসা

মুক্তিযুদ্ধ, পটিয়া মাদরাসা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মেজর জিয়া

২৬ মার্চ, ১৯৭১-এর ভয়াল রাত। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারী বাঙালী মেজর জিয়াউর রহমান (পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি) চট্টগ্রাম কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই হানাদার বাহিনীর গোলাগুলি শুরু হয়ে যায়। নিরাপত্তার কথা ভেবে মেজর জিয়া বেতারের যন্ত্রপাতি এবং সৈন্যদের ট্রাকে নিয়ে সরাসরি জামেয়া পটিয়া মাদ্রাসায় চলে আসেন। এখানে এসেও তিনি পুনরায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। রাতে তিনি জামিয়ার মেহমানখানায় অবস্থান করেন।

পটিয়া সম্পর্কে আরও জানতে




পটিয়া সম্পর্কে আরো জানতে ও জানাতেআমাদের ফেসবুক পেজের সাথেই থাকুন
Keep updated with us via www.facebook.com/VoiceofPatiyaOfficial

আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ইমেইলে (contact@voiceofpatiya.com) ফেসবুক মেসেঞ্জার (https://m.me/VoiceofPatiyaOfficial) ঠিকানায়।

0 comments so far,add yours

~ মন্তব্য নীতিমালা ~

😀 আমাদের প্ল্যাটফর্মে মন্তব্য, আলোচনা, সমালোচনা বজায় রাখার জন্য আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করেছি। আমরা আশা করি যে, কোন মন্তব্য পোস্ট করার সময় আপনারা তার অনুসরণ করবেন।

• ভয়েস অব পটিয়া কর্তৃপক্ষ ভিজিটর কর্তৃক নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে এমন মন্তব্যগুলো মুছে ফেলার অধিকার সংরক্ষণ করে।

• জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বয়স, লিঙ্গ, চেহারা বা অক্ষমতার ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি, কোন গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতি আপত্তিকর বা আক্রমণ করে এমন ভাষায় মন্তব্য করা যাবে না।

• আলোচনার বিষয়ের সাথে সম্পর্ক নেই এমন কোন মন্তব্য করা যাবে না। কিছু বিষয় ব্যতিক্রমী হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে, তবে আলোচনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পারে এমন কোনো বিষয় ভয়েস অব পটিয়া কর্তৃক অনুমোদন করা হবে না।

• কোনো পক্ষকে আইনি ঝামেলায় ফেলতে পারে এমন মন্তব্য করা যাবে না।

• বাণিজ্যিক প্রকৃতির কিংবা বিজ্ঞাপনীয় উপাদান/লিঙ্ক রয়েছে এমন মন্তব্য করা যাবে না।

• যেসব মন্তব্য স্প্যামিং বলে মনে হচ্ছে এবং একাধিক পোস্ট জুড়ে অভিন্ন মন্তব্য করলে সেগুলো মুছে ফেলা হবে।

• ঘৃণাত্মক, সহিংসতার প্ররোচনা দেয় অথবা ধর্মকে আক্রমণ করে এমন কোন মন্তব্য করা যাবে না।