পটিয়ায় সার্জেন্ট মহি আলম খালের দূষণরোধে মানববন্ধন |
ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নাধীন সার্জেন্ট মহি আলম খালে কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের ফলে সৃষ্ট দূষণ বন্ধের দাবীতে গতকাল (শুক্রবার, ০৫ জুলাই) চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া শাহগদী মার্কেট চত্বরে ‘ক্লিন বাংলাদেশ’ সংগঠনের ব্যানারে সর্বস্তরের জনসাধারণের অংশগ্রহণে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা সার্জেন্ট মহি আলম খালের দূষণ রোধে কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশন খালে বন্ধের দাবী জানান।
এতে বক্তারা বলেন, পটিয়ার বেশ কয়েকটি শিল্প-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে সরাসরি খালে নিষ্কাশনের ফলে খাল সংলগ্ন আবাদি জমিগুলোতে প্রায় ৮ বছর ধরে বোরো ফসলের চাষ হয়না। শিল্প-কারখানার এসব বিষাক্ত বর্জ্য খালে পড়ে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। শিল্প-কারখানার এসব বর্জ্যের প্রভাবে ফসলি জমির সেচের পানি দূষিত হওয়ার প্রভাবে উপজেলার তিন শতাধিক একর ধানি জমিতে বোরো চাষাবাদ বন্ধ হয়ে পড়েছে। খালের পানি দূষিত হয়ে দুর্গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে যা ওই এলাকার পরিবেশকে বিষিয়ে তুলেছে। প্রতিনিয়তই এসব বিষাক্ত বর্জ্য খালে পড়ছে। শিল্প-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য খালে পড়ে পানি দূষিত করে তুললেও পরিবেশ অধিদপ্তর অজানা কারণে নীরব।
জোয়ার-ভাটার এই খালটির সঙ্গে চাঁনখালী, বোয়ালখালী খাল ও কর্ণফুলী নদীর সংযোগ রয়েছে। এর ফলে জোয়ার ও ভাটার সময় বিষাক্ত বর্জ্য কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে মিশছে। দূষিত পানির কারণে খালে জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। বিষাক্ত বর্জ্যের প্রভাবে সার্জেন্ট মহি আলম খালের পানি নষ্ট হয়ে নীল ও কালচে রং ধারণ করছে ও দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। দুর্গন্ধের প্রভাবে খালের আশপাশের বাড়িঘর, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও বহু মসজিদের মুসল্লিরা নামাজ পর্যন্ত আদায় করতে পারছেন না। খালের পাশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চলাচলরত হাজার হাজার যাত্রীকে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়তে হয় বিষাক্ত পানির দুর্গন্ধে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পার্শ্বে পটিয়া উপজেলার আমজুর হাট মোড় থেকে শুরু করে মনসা বাদামতল এলাকার প্রায় ১৫ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তীর্ণ সার্জেন্ট মহি আলম খাল। এই খালের পানি দিয়ে উপজেলার উজিরপুর, নাইখাইন, গৈড়লা, লড়িহরা, দক্ষিণ হুলাইন, এয়াকুবদন্ডী, তিয়ারকুল, উজিরপুর, উনাইনপুরা ও পৌরসভার আল্লাই এলাকার কয়েকশ কৃষক ধানি জমিতে প্রতি মৌসুমে চাষাবাদ করে থাকেন। খালের সম্মুখে গড়ে উঠা শাহ আমানত নিটিং এ্যান্ড ডাইং, ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টসের বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি খালে ছেড়ে দেয়ার কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এলাকার কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে খালের পানি পরীক্ষা করে পানি দূষিত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। খালের এই পানি দিয়ে বোরো চাষাবাদ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিন যারা এই রুট দিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করেন তাদের গৈড়লার মোড় হতে বাদামতল এলাকা পর্যন্ত পানির বাজে দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে যায়।
এলাকাবাসী অনতিবিলম্বে শিল্প-কারখানার বর্জ্য খালে নিষ্কাশন বন্ধের দাবী জানান। তারা এ ব্যাপারে পটিয়া উপজেলা প্রশাসন ও সাংসদ হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো দেখুন >> পরিবেশ দূষণের দায়ে ফুলকলিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা