পাহাড়ী ঢলে পটিয়া উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি |
ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ পাহাড়ী ঢল ও টানা বর্ষণে পটিয়া উপজেলার ১৭ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্লাবনে ভেসে গেছে বসতবাড়িসহ প্রায় দুশতাধিক পুকুরের মাছ।
রোববার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এ প্লাবণের ফলে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে উপজেলার কেলিশহর, হাইদগাঁও, কচুয়াই, খরনা, ভাটিখাইন, ছনহরা, ধলঘাট, হাবিলাসদ্বীপ, জিরি, কুসুমপুরা, আশিয়া, কোলাগাঁও ছাড়াও পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড।
প্রবল বৃষ্টির কারণে উপজেলার অধিকাংশ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের স্রোতে উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের অনেক বসতঘর ভেসে গিয়েছে। পানিতে আটকা পড়েছেন অনেকে। পানিতে আটকা পড়াদের ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে সঠিক সময়ে বৃষ্টির অভাবে কৃষকরা শুরু করতে পারেনি আমন ধানের চাষাবাদ। তবে অনেক কৃষক আমন চাষাবাদের বীজ রোপণ করলেও অতি বৃষ্টির ফলে বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে।
কচুয়াই ইউনিয়নাধীন শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে লোকালয়। বেড়িবাঁধের ভাঙনের ফলে ভাটিখাইন, ছনহরা ও কচুয়াই ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে যায়, টানা চারদিনের ভারী বর্ষণে উপজেলার ১৭ ইউনিয়ন ও পৌরসভার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরিমধ্যে পটিয়া পৌর কর্তৃপক্ষের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ি ঢলে ও বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে। বুধবার সকাল থেকেই অনেকটা গৃহবন্দি হয়েছে পড়েছেন সাধারণ জনগণ। পুকুর থেকে ভেসে যাওয়া মাছ ধরতে বিভিন্ন এলাকার লোকজন প্রতিযোগিতায় মেতেছেন। উপজেলা ও পৌর এলাকার অনন্ত দুশতাধিক পুকুরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
এদিকে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের পটিয়া পোস্ট অফিস মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে। শ্রীমাই খালের ভাটিখাইন এলাকার দুইটি স্পটে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘টানা বর্ষণে পটিয়া উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যেসব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা সংগ্রহ করার কাজ চলছে।’
কচুয়াই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল হক জসিম ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পুরো কচুয়াই ইউনিয়ন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। লোকজন আতংকের মধ্যে রয়েছে। যে কোনো মুহুর্তে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিশু পাইকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ এসব এলাকা পরির্দশন করে ক্ষতিগ্রস্থদের নামের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারীভাবে সহযোগীতা প্রদান করা হবে বলে তারা আশ্বস্ত করেন।
ছবি: পাহাড়ী ঢলে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ বিতরণ |
ইতিমধ্যে ভাটিখাইন ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন বিভাগ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ত্রাণের আওতায় উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়।