নতুন গ্যাসকূপের সন্ধানে বাপেক্স, পটিয়ার বুদবুদিছড়াও রয়েছে তালিকায় |
ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ চট্টগ্রামজুড়ে গ্যাসের সন্ধানে মাটির গভীরে যেতে চায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানী (বাপেক্স)।
রাষ্ট্রায়ত্ত্ব এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের অন্যান্য স্পটগুলোর পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মোট ৪টি স্পটে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। ইতিমধ্যে বাপেক্স এসব স্পটে ত্রিমাত্রিক জরিপ সম্পন্ন করেছে। জরিপের ফলাফলে, ভূপৃষ্ঠের পাঁচ কিলোমিটার গভীরে আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছে বাপেক্স। তালিকায় রয়েছে পটিয়ার বুদবুদিছড়াও।
চট্টগ্রামের পটিয়া বুদবুদিছড়া, সীতাকুণ্ড, বাঁশখালী এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের কাসালংয়ে ইতিমধ্যে গ্যাসের অবকাঠামো রয়েছে। এসব এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপে, ভূপৃষ্ঠের প্রায় পাঁচ হাজার মিটার নিচে খনন করলে কমপক্ষে ১.৬ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট (TCF) গ্যাস পাওয়া যেতে পারে। এসব স্পটগুলোতে দ্রুত অনুসন্ধান শুরুর কথা ভাবছে বাপেক্স।
বৃহত্তর চট্টগ্রামে গ্যাস উত্তোলনের জন্য ছয় দশক পূর্ব হতে অন্তত চারটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা ছিল। এগুলো হচ্ছে পটিয়ার বুদবুদিছড়া, বাঁশখালীর জলদি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সীতাপাহাড় ও কাসালং।
ব্রিটিশ আমলে বৃহত্তর পটিয়ার হাইদগাঁও পাহাড়ী এলাকার শ্রীমাই বুদবুদিছড়া নামক স্থানে একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। একটি বিদেশী কোম্পানী ওই গ্যাসকূপ খনন করার কাজ শুরু করে। কিন্তু তখন ওই এলাকা দুর্গম এবং নিরাপত্তাহীন হওয়ার অজুহাতে কাজ বন্ধ করে দেয় তারা।
এরপর ১৯৫৫ সালে বুদবুদিছড়া এলাকায় আবারও জরিপ চালিয়ে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। তৎকালীন বার্মাহ অয়েল কোম্পানী নামের একটি বিদেশী গ্যাস উত্তোলনকারী কোম্পানী ওই এলাকায় গ্যাস উত্তোলনের জন্য কূপ খনন করে। কিন্তু পরবর্তীতে নানা অজুহাতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্যাসকূপের নাভীপথে সীসা ঢালাই করে ওই কূপ বন্ধ করে দেয়। এরপর কয়েকদফা ওই গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়া হলেও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং সদিচ্ছাগত কারণে ওই কূপ হতে গ্যাস উত্তোলনের কাজ আর এগোয়নি। এখনও হাইদগাঁও বুদবুদিছড়া এলাকা ছাড়াও শ্রীমাই খাল তীরবর্তী পাহাড়ী ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রতিনিয়ত নির্গত হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস। মাটিতে দিয়াশলাই জ্বালালে জ্বলছে গ্যাস।
পটিয়ার বুদবুদিছড়া এলাকা ছাড়াও ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে বাঁশখালীর জলদি এবং আশির দশকে সীতাপাহাড়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের কাসালংয়ে তৈরি করা হয় গ্যাসকূপ খননের অবকাঠামো।
বিগত কয়েক দশকজুড়ে চট্টগ্রামজুড়ে গ্যাস অনুসন্ধান করার জন্য বেশ কয়েকদফা এতদঞ্চলের জনগণ দাবি উত্থাপন করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাপেক্স নতুন করে গ্যাসকূপ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করলো।